ভালো মানসিকতা গড়ে তুলতে আমাদের কি কি করা প্রয়োজন?

চমৎকার একটি প্রশ্ন উঠে এসেছিল গত ইউটার্ণ ক্লাবের আলোচনা পর্ব শেষে। কি ভাবে আমাদের মধ্যে ভালো মানসিকতা গড়ে ওঠা সম্ভব ? প্রশ্নটা কে চমৎকার এই জন্য বলছি কারন; প্রশ্নটাকে যদি একটু ভিন্ন ভাবে করা হতো যেমন “ কেন আমরা ভালো মানসিকতার চর্চা করব” তাহলেই কিন্তু উত্তর খুব সহজ হয়ে যেত।

আজ আমরা এমন একটা সময়ে অবস্থান করছি, যখন সবাই আমরা সুন্দর কথা বলছি, অথচ সুন্দর কে ধারণ করছি না। আমরা ক্ষমা চাইছি সৃষ্টিকর্তার কাছে সব সময়, কিন্তু অন্যকে ক্ষমা অথবা বিশ্বাস করতে পারছি না।

অন্যের ভুল ধরছি কিন্তু নিজেকে বদলাতে পারছিনা। আমি এবং আমরা মিলে প্রতিদিন একটু একটু করে এই সমাজকে আঁধারের দিকে ঠেলে দিচ্ছি। মন্দতার চাষাবাদে ব্যস্ত আমরা। যার পরিণাম খুব ভয়াবহ। কি রেখে যাচ্ছি আমরা আগামী প্রজন্মের জন্য? কোন সমাজ আমরা প্রস্তুত করছি তাদের জন্য?

যদি এই সমাজ এই পরিবেশ কে বদলাতে হয় তবে বদলাতে হবে আমাদের, পদক্ষেপ নিতে হবে। পরিবর্তনের জন্য নিজেকেই শুধরাতে হবে। আর প্রতিদিনের কিছু ব্যক্তিগত পরিচর্যার মাধ্যমে আমরা সহজেই আমাদের এই খারাপ মানুষিকটাকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে পারি। যেমন:

পরিচ্ছন্নতা ও নিজের প্রতি যত্নবানঃ প্রতিদিন শারীরিক এবং মানসিক ভাবে বেড়ে উঠার ধারাকে গতিশীল রাখতে হবে। মন্দ ইচ্ছা থেকে নিজের দেহ, মন এবং আত্মার সুরক্ষা করতে হবে। নিজের আত্মশুদ্ধি ও আত্মার প্রশান্তির জন্য নিয়ম করে কিছু সময় ব্যায়াম করতে হবে।

কৃতজ্ঞতা স্বীকার ও অন্যের প্রতি দায়িত্ববান হওয়াঃ প্রতিদিন অন্যকে সাহায্য করা, তাদের বোঝা বহন করার মানসিকতা, ভালোবেসে তাদের কে সময় দেয়া এবং তাদেরকে উৎসাহিত করা যেন তারা ভাল কাজের উদ্যোগী হতে পারে। প্রতিদিন সৃষ্টিকর্তার প্রতি, আত্মীয়-স্বজন, মা-বাবা, শিক্ষক ও মুরুব্বিদের প্রতি কৃতজ্ঞতার অন্তর তৈরী করতে হবে।

আনন্দের সাথে ভালোলাগার কাজে সম্পৃক্ত থাকা ও নতুন কিছু করাঃ প্রতিদিন নতুন কিছু শেখা-নতুন কিছু জানা, নতুন পথে হাটা, নতুন মানুষের সাথে চলা। নতুন ভাবনা গুলো নিকট জনের সাথে আলোচনা করা। আমরা যা করে আনন্দ পাই, যেটা করে ভালো লাগে, যেই কাজে আমাদের আগ্রহ আছে, ধৈর্য্ আছে তার সাথে যুক্ত থাকতে হবে।

অল্পতে খুশি থাকা দিনলিপি লেখা: সাধারণ জীবন-যাপন করতে হবে। অতি প্রত্যাশা মানুষকে দুঃখিত করে, অহংকারী করে, মানুষকে লোভে ফেলে। চাওয়া-পাওয়ার সীমাবদ্ধতা রেখে এগিয়ে যেতে হবে এবং আমাদের ব্যক্তিত্ব যেন অন্যের কাছে বাধা না হয়ে যেন উদার হয়। এছাড়া প্রতিদিন ভালো বই পড়ে-ভালো ছবি দেখে-অথবা সুন্দর গান শুনে নিজের উপলব্ধির কথা, ভাবনা প্রতিদিনের স্বপ্ন গুলো এবং নিজের পরিবর্তনের উপলব্ধি গুলো একটি নোটবুকে টুকে রাখতে হবে।

আর এবস বিষয়ে যদি আমরা নিয়মিত চর্চা চালিয়ে যেতে পারি, তবে সত্যিই আমাদের মধ্যেও পরিবর্তন আসবে, ভালো মানসিকতা গড়ে উঠবে।

তাই বলছি সবাইকে; এখন আমরা কোথায় দাড়িয়ে আছি এটা বড় বিষয় না, কিন্তু আমরা কোথায় যেতে চাই, কতটা দুরের পথ? আমাদের কে প্রতিদিন সেই ভাবে বেড়ে উঠতে হবে, প্রতিদিন নিজেকে ধারাল করতে হবে, কিছু ধারণ করতে হবে, কিছু আহরণ করতে হবে, বেড়ে উঠতে হবে সুন্দরের সাথে।

Follow me

You may also like...